বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ও ফেসবুক গ্রুপে প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত সাহায্যের জন্য অনেকেই পোস্ট করে। আবার অনেকসময় সেসব পোস্টের সাথে কোডও থাকে। কেউ কেউ কোডের স্ক্রিনশট নেয়, কেউ বা সরাসরি কোড পেস্ট করে। এতে কোড দেখতে অনেক বাজে লাগে এবং বোঝা কঠিন হয়ে যায়। ফেসবুকে কমেন্ট আকারে কোড পেস্ট করলে ইনডেন্টেশন নষ্ট হয়ে যায়। আর পাইথনের মতো ল্যাঙ্গুয়েজ যেখানে ইনডেন্টেশন অনেককিছু নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে তো ইনডেন্টেশন না থাকলে তেমন কিছুই বোঝা যায় না। আসলে নিজের কোড অন্যকে সাময়িক সময়ের জন্য দেখাতে চাইলে সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে কোড শেয়ার করার ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করা। এরকম তিনটি ওয়েবসাইটের নাম দিয়ে দিচ্ছি :
এখানে নাম লিখতে হবে, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ সিলেক্ট করতে হবে, কোড পেস্ট করতে হবে, তারপরে Paste! বাটনে ক্লিক করলে যেই নতুন লিঙ্কটি তৈরি হবে, সেটি দিয়েই কোড শেয়ার করা যাবে।
শেষ হল Code it, Girl-এর প্রথম ইভেন্ট – প্রোগ্রামিংয়ের ওপর দিনব্যাপী কর্মশালা। ২৩ টি স্কুল/ কলেজ থেকে মোট ৪৩ জন ছাত্রী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছে। ওয়ার্কশপটি ছিল আট ঘণ্টার এবং ওয়ার্কশপে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ব্যবহার করে হাতে-কলমে প্রোগ্রামিং করে। কর্মশালার বেশিরভাগ সময়ই তারা কাটায় পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে নানান রকমের প্রোগ্রামিং করে। এছাড়া সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার ও লিনাক্সের ব্যবহার সম্পর্কে তারা ধারণা লাভ করে ও আওয়ার অব কোড-এ অংশ নেয়।
কর্মশালাটি পরিচালনা করেন দ্বিমিক কম্পিউটিং-এর তামিম শাহরিয়ার সুবিন এবং তাহমিদ রাফি। তাদের সাথে আরো ছিলেন সফটওয়্যার প্রকৌশলী আশিকুর রহমান মুশফিক এবং রাশিদুল হাসান সৈকত।
ইভেন্টটি স্পন্সর করেছে হাফিযা খাতুন মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। এই ইভেন্টের ভেন্যু পার্টনার হিসাবে ছিল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়। ইন্সপিরেশন পার্টনার ছিল কিশোর আলো। পার্টনার হিসাবে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)। আর ওয়ার্কশপের পরিকল্পনা ও সকল প্রকার একাডেমিক সহযোগীতায় ছিল দ্বিমিক কম্পিউটিং।
সন্ধ্যায় ওয়ার্কশপ-এর সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব মুনির হাসান, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান তৌহিদ ভুঁইয়া, ভ্যানটেজ ল্যাবস এর ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মোজাম্মেল হক, Code it, girl এর মেনটর এবং দ্বিমিক কম্পিউটিং এর সহপ্রতিষ্ঠাতা তামিম শাহরিয়ার সুবিন, স্পন্সর হাফিযা খাতুন মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে ফেরদৌস বাপ্পি এবং আরো অনেকে। আর Code it, girl আয়োজকদের পক্ষ থেকে কথা বলেন আফরীন হোসেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল স্যার অনুষ্ঠানে আসতে না পারলেও ফোন করে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন এবং এই উদ্যোগ এর সাথে নিজের একাত্মতা প্রকাশ করেন। সমাপনী পর্বে আয়োজকরা দেশে ও বিদেশে বড় বড় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সফল নারীদের নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশান প্রদর্শন করেছেন যেটা অংশগ্রহণকারীদের প্রোগ্রামিং শিখতে আরও উৎসাহিত করেছে।
Code it, girl! একটি অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান, এর উদ্যোক্তারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আয়োজকরা হলেন আফরীন হোসেন, মিরফাত শারমিন, রিজভী বিন ইসলাম, মোশ্তাক আহমেদ ম্যাক, তাপস পাল, আশিকুর রহমান মুশফিক, শুভ্র সরকার, রাশিদুল হাসান সৈকত, ওয়াজদা আখতার এবং নাদিয়া রাহমান বৃষ্টি। আয়োজকরা সবাই এক সময় ওয়ালট ডিজনির অংশ, প্লেডম বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডে গেম ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করতেন।
Code it, girl! এর চেষ্টা থাকবে অনলাইন গ্রুপ এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন টিউটোরিয়াল, ব্লগ, বই, তথ্য এবং প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মেয়েদের কে নিজে নিজে প্রোগ্রামিং শিখতে সাহায্য করা। গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে আছেন বেশ কিছু দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার যারা এই কাজে সাহায্য করবেন। আর সুযোগ পেলে এরকম কিছু ওয়ার্কশপের আয়োজন করারও ইচ্ছা আছে এই প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তারা আশা করেন ধীরে ধীরে মেয়েরা কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে এবং প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করতে আরও বেশি উৎসাহিত হবে তাদের এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে।
ফেসবুক গ্রুপ এর লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/groups/292738210923130/
পেইজের লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/codeitgirl